Store Locator

page-header

NEWS

একদিন দেখা যাবে পৃথিবীর সর্বত্রই প্রাণ-আরএফএলের পণ্য পৌঁছে গেছে



কৃষিজাত পণ্য বিশেষ করে খাদ্যপণ্য রফতানিতে বাংলাদেশে নেতৃত্বের ভূমিকায় আছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রতিষ্ঠান। এটা কীভাবে সম্ভব হলো? আপনাদের এ প্রেরণাদায়ী যাত্রা সম্পর্কে জানতে চাই।

১৯৯৭ সালে ফ্রান্সে কৌটায় আনারস রফতানির মাধ্যমে আমাদের রফতানির পথচলা শুরু হয়। প্রথম চালান থেকে আমাদের রফতানি আয় ছিল মাত্র ১ হাজার ১০০ ডলার। আমার প্রয়াত পিতা আমজাদ খান চৌধুরী আমাকে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশী কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য বিপণনের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। বিশ্বের অনেক জায়গায় ব্যবসা শুরুর পরিকল্পনা থেকেই তিনি আমাকে বিভিন্ন জায়গায় পাঠাতেন। সে সময় আমাকে ভারতের ত্রিপুরা পাঠিয়েছিলেন যেন সেখানে আমরা ব্যবসা করতে পারি। আমরা কিন্তু ভারতের মাটিতে ব্যবসা শুরু করি ত্রিপুরা থেকেই। চানাচুর রফতানি দিয়ে শুরু হয়েছিল ভারতযাত্রা। এখন ভারতের প্রায় সব রাজ্যে প্রাণ পণ্য পৌঁছে গেছে। শুধু তাই নয়, প্রাণের পটাটা ও লিচি ড্রিংকসহ কয়েকটি পণ্য এখন ভারতীয় ভোক্তাদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়।  

রফতানির শুরুর দিকে আমি প্রচুর সময় ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে ব্যয় করেছি এবং সেটি এখনো ধারাবাহিকভাবে করে যাচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করতাম প্রবাসী বাংলাদেশীরা আমাদের জন্য আশীর্বাদ হবে এবং তাদের মাধ্যমে সেসব বাজারে আমরা সহজে প্রবেশ করতে সক্ষম হব। লক্ষ্য ঠিক রেখে পণ্য পাঠাতে শুরু করলাম এবং প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পেলাম। আমরা দেখলাম, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের স্থানীয় লোকজনও প্রাণের পণ্য কিনছে। আমরা তাদের চাহিদা বুঝতে চেষ্টা করলাম এবং সেভাবে পণ্য পাঠাতে শুরু করলাম। এখন মধ্যপ্রাচ্য প্রাণের পণ্য রফতানির দ্বিতীয় গন্তব্য। আমরা এখন ইউরোপে প্রচুর পরিমাণ ফ্রোজেন ফুডস, কালিনারি আইটেম, কনফেকশনারি পণ্য রফতানি করছি। 

আপনাদের পণ্যের বাজার কোন কোন দেশে বিস্তৃত হয়েছে? কোন ধরনের পণ্যের চাহিদা বেশি?

ভারত আমাদের জন্য প্রধান বাজার। শুরুতে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যে আমাদের পণ্য পাওয়া গেলেও এখন পুরো ভারতে আমাদের পণ্য ছড়িয়ে পড়েছে। ব্যবসার প্রসারের জন্য আমি বেশির ভাগ সময় মধ্যপ্রাচ্যে থাকি। কারণ মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের সম্ভাবনা বিপুল। আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, ওমানসহ মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশে প্রাণ পণ্যের এখন ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। আফ্রিকা নিয়েও আমি প্রচণ্ড আশাবাদী। সেখানেও আমি প্রচুর সময় কাটাই। আফ্রিকায়ও মানুষের প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের ডিমান্ড বাড়ছে। সেখানে আমরা পণ্য রফতানি করছি। 

আমাদের উল্লেখযোগ্য পণ্য হলো ফ্রুট ড্রিংক, স্ন্যাকস, বিস্কুট, ক্যাচআপ, সস, নুডলস, জেলি, মসলা, সুগন্ধি চাল, কনফেকশনারি ও ফ্রোজেন ফুড। 

বলা হয় বাংলাদেশের রফতানি খাতে বৈচিত্র্য কম। এক্ষেত্রে কৃষিজাত ও খাদ্যপণ্য রফতানিতে আপনাদের সাফল্যকে অনেকে দেশের অর্থনীতির জন্য সুসংবাদ হিসেবে দেখেছেন। রফতানি পণ্যের ঝুড়িতে বৈচিত্র্য বাড়াতে কৃষিজাত পণ্য সামনের দিনে কেমন ভূমিকা রাখতে পারে?

সারা পৃথিবীতে এখন তাজা কৃষিপণ্যের চাহিদা দিন দিন কমে যাচ্ছে এবং ভোক্তারা প্রক্রিয়াজাত পণ্যের দিকে ঝুঁকছে। কেননা কৃষিতে সঠিক প্রক্রিয়াকরণ পণ্যকে এখন মানুষ নিরাপদ খাদ্য গ্রহণের উপায় হিসেবে বেছে নিচ্ছে। তাই বাংলাদেশ কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রফতানির মাধ্যমে সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারে। ভিয়েতনাম কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রফতানি করে ৪ হাজার কোটি  ডলার আয় করে। সেখানে বাংলাদেশ থেকে রফতানি ১ বিলিয়ন। সুতরাং এ খাতে আমাদের ভালো করার অনেক সুযোগ রয়েছে।  

শুল্কমুক্ত বাধা না থাকায় আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোয় ভারতের কোম্পানিগুলো অনেক ভালো করছে। আমাদের কোম্পানিগুলো যদি সেই সুযোগ পায়, তবে এ অঞ্চলে রফতানি বৃদ্ধির বিশাল সুযোগ আসবে। 

ইউরোপে বাংলাদেশী মসলা ও খাদ্যপণ্যের ভালো চাহিদা রয়েছে। কৃষকরা মানসম্মত মরিচ, হলুদসহ মসলাজাতীয় ফসল যত উৎপাদন বেশি করবেন, তাতে পণ্যের গুণগত মান বাড়বে, রফতানিও বৃদ্ধি পাবে। ইউরোপ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ায় ফ্রোজেন ফুডসের ভালো বাজার রয়েছে। 

আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের খাদ্যপণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আগামী দিনগুলোতে ফ্রুট ড্রিংকস, কনফেকশনারি, বিস্কুটসহ বিভিন্ন ড্রাই ফুডসের ব্যাপক ভালো করার সুযোগ রয়েছে। 

বৈশ্বিক ও দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে রফতানি বৃদ্ধিকে জরুরি কাজ বিবেচনা করা হচ্ছে। রফতানি খাতে আপনারা বড় অংশীদার। রফতানি আরো বাড়াতে আপনাদের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাই।

দেশে কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য এখন ১০০ কোটি ডলার সমমূল্যের পণ্য রফতানি করছে। আমাদের পরিকল্পনা, শিগগিরই শুধু কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রফতানি করে প্রাণ একাই তার অধিক পরিমাণ পণ্য রফতানি করতে সক্ষম হবে। নেসলে অথবা ইউনিলিভার সারা বিশ্বে ব্যবসা করে প্রায় ১০ হাজার কোটি ডলার। আমরা সেখানে অনেক ক্ষুদ্র, তবে আমরা আত্মবিশ্বাসী।  

আমরা এখন কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের পাশাপাশি নন-ফুড আইটেমের রফতানি বাড়াচ্ছি। রফতানি বহুমুখীকরণের যে কথা বারবার বলা হচ্ছে আমরা সেটিই করছি। আমাদের লক্ষ্য দেশে আমাদের যত ধরনের পণ্য উৎপাদন হয় তার সবই বিদেশে রফতানি করা। সম্প্রতি আমরা প্রথমবারের মতো আফ্রিকায় গ্যাসের চুলা পাঠালাম, ফ্যান পাঠালাম ফিজিতে, আফ্রিকার অন্য একটি দেশে রাইস কুকার পাঠিয়েছি। ইউরোপে আমরা কনটেইনার, পাইপসহ বিভিন্ন পণ্য পাঠাচ্ছি। এ প্রক্রিয়া চলমান। প্রাণ এরই মধ্যে ১৪৫টিরও বেশি দেশে পৌঁছে গেছে। আরএফএল পৌঁছে গেছে ৩৫টিরও বেশি দেশে। বাংলাদেশ থেকে আমরা বৈচিত্র্যময় পণ্য নিয়ে পৃথিবীর প্রত্যন্ত অঞ্চলে হাজির হচ্ছি। এছাড়া আমরা আমাদের মেধার সমন্বয় করে সম্মুখপানে এগিয়ে যাচ্ছি। ওই সময় আসতে খুব বেশি দেরি নেই, একদিন দেখা যাবে পৃথিবীর সর্বত্রই প্রাণ-আরএফএলের পণ্য পৌঁছে গেছে।

রফতানি করতে গিয়ে আপনাদের এ মুহূর্তে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে কি? হলে তা থেকে উত্তরণের উপায় কী? 

আমাদের বিদ্যমান কৃষি ব্যবস্থা থেকে বাণিজ্যিক কৃষি ব্যবস্থায় যেতে হবে, যেখানে প্রযুক্তির ব্যবহার ও উচ্চফলনশীল বীজের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ফসল ফলানোর চেষ্টা করতে হবে। এতে পণ্যের উৎপাদন খরচ কমে আসবে। বিশ্ব বাজারে আমাদের প্রধান প্রতিযোগী ভারত ও

Store Location

Store location content
will go heres

Store Locator

Contact Us

Have any question? We are here to talk! 

Let us know your queries

Contact Us